Home সজাগ অনুসন্ধান আফছার আলী নিজেই দেওয়ানী আদালত!

আফছার আলী নিজেই দেওয়ানী আদালত!

349
0
জমি-জমার মুল দলিলের দাগ-খতিয়ান ওভার রাইটিং

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দলিল সম্পাদনার পর জমির দাগ-খতিয়ান ভুল হলে তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে মামলা করলে আদালত ইচ্ছে করলে দাগ-খতিয়ান ঠিক করে দিতে পারে।

তবে নাটোরের সিংড়া উপজেলার আগপাড়া শেরকোল গ্রামের মৃত ইয়াতুল্লাহ মোল্লার ছেলে আফছার আলী নিজেই দেওয়ানী আদালত। তিনি নিজেই জমি-জমার মুল দলিলের দাগ-খতিয়ান ওভার রাইটিং করে ঠিক করেন। তার কাছে দেওয়ানী আদালতের প্রয়োজন হয় না।

জানা যায়, উপজেলার শেরকোল ইউপির আগপাড়া শেরকোল গ্রামের মৃত আজগর আলী ও তার স্ত্রী মৃত নকিরন নেছা ১১-০৩-১৯৫৭সালে সাবেক ৯৫৮দাগের ২৯শতাংশের কাত ২০শতাংশ এবং ৬৯২দাগের ৩৩শতাংশের কাত ১৩শতাংস জমি কিনে ভোগদখল ও বসবাস করতে থাকেন।

রেকর্ডে স্বামীর অংশসহ পুরো জমি নকিরন নেছার একক নামে হয়। নকিরন নেছার পেটের সন্তানাদি না থাকায় স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়ে সতিনের ছেলেকে তার দলিল মোতাবেক ১৮শতাংস জমি লিখে দেন নকিরন নেছা।

এরপর ২৯/০১/১৯৭৩সালে খোদাবস্ক ও খলিল মন্ডলের কাছে ৬৯২দাগের ৩৪শতাংসের কাত ২৬শতাংস জমি বিক্রি করার ৪/৫মাসের মাথায় মারা যান নকিরন নেছা।

তার মৃত্যুর পর প্রতিবেশী মৃত ইয়াতুল্লাহ মোল্লার ছেলে আফছার আলী ০৪/০৯/১৯৭৫সালে অন্যলোককে নকিরন নেছা সাজিয়ে ওই ৯৫৮দাগের ২৯শতাংশের কাত.২৫শতাংশ জমির দলিল করে। তাড়াহুড়া করে দলিল করায় দাগ-খতিয়ান ভুল হয়। পরে দলিলের ফটোকপিতে দাগ ও খতিয়ান “ওভার রাইটিং” করে ১৯৮২-৮৩সালে গোপনে নামজারী করে নেয়।

বিষয়টি জানতে পেরে আনোয়ার হোসেন,আফছার আলীর নামজারী বাতিল চেয়ে সিংড়া উপজেলা ভূমি অফিসে একটি মিসকেস মামলা দায়ের করে। প্রায় দুই বছর উভয় পক্ষের দালিলিক প্রমানাদি ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিক্তিতে আফছার আলীর নামজারী বাতিল করে উপজেলা ভূমি অফিস।

উল্লেখ্য দেশ স্বাধীনের পর থেকে অদ্যবদি ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে আসছেন আনোয়ার হোসেন। এবার ভুমিদুস্য আফছার আলী তার মুল দলিলের দাগ ও খতিয়ান “ওভার রাইটিং” নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে (রাজস্ব) বিভাগে আপিল করেছেন।

“১৯৫০সালের রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্রের ভূমি আইনের (১৫০)’র” উপ-ধারায় বলা হয়েছে,দলিল সম্পাদনার পর যদি কোন দলিলের খতিয়ান, দাগ অথবা নামের বানান ভুল হলে তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে ভুল সংশোধনের মামলা করলে আদালত ইচ্ছে করলে ভুল দাগ-খতিয়ান ঠিক করে দিতে পারে। তবে আফছার আলী আদালতের তোয়াক্কা না করে নিজেই “ওভার রাইটিং” করে দলিলের দাগ ও খতিয়ান ঠিক করে নিয়েছেন।

মৃত্যুর পরে ভুয়া দলিল করে নিয়ে পেশিশক্তি দিয়ে ওই জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন আফছার আলী। শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র ও সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আজগর আলীর স্ত্রী দাতা নকিরন নেছা ১৯-৭২-৭৩সালে মারা গেছেন।

ঢাকা সুপ্রিম কোটের আইনজীবি শাহ্ আহমেদ বাদল বলেন, আদালতে মামলা না করে নিজে নিজে দাগ-খতিয়ান ওভার রাইটিং করলে ওই দলিল বাতিল যোগ্য এবং জাল দলিল হিসেবে আইনে শান্তির বিধান রয়েছে।

Previous articleসিংড়া পৌর নির্বাচনে সরব আ’লীগ-বিএনপি!
Next articleপিতার প্রচারনায় সাত বছরের অরিন ফেরদৌস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here