
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের গুরুদাসপুরে সামাজিক ফতোয়া দিয়ে একটি অসহায় পরিবারকে ‘একঘরে’ রাখার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেনের হস্তক্ষেপে ‘একঘরে’ মুক্ত হয়েছে পরিবারটি।
গত দু’দিন ধরে ফতোয়াবাজরা নিরহ পরিবারটিকে একঘরে করে রাখার পর সোমবার দুপুর ২টার দিকে মুক্ত হয়।
ইউএনও তমাল হোসেন জানান, স্থানীয় গণমাধ্যমের সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের দেবোত্তর গরিলা গ্রামে একটি পরিবারকে ‘একঘরে’ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
এরপরেই উপজেলার দুজন অফিসার আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্পের লুৎফর নাহার লতা এবং বিআরডিবি কর্মকর্তা নূরে আলমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে তারা দু’জন সেখানে গিয়ে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। ফতোয়া দিয়ে প্রচলতি আইনের বাহিরে কাউকে একঘরে করে রাখা যাবে না, এমন বার্তা দেওয়া হয়। এসময় এলাকার লোকজন তাদের আর হয়রানী করবে না মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন।
ইউএনও তমাল হোসেন বলেন, প্রচলিত আইনের বাহিরে গিয়ে কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখার এখতিয়ার কারও নেই। বিষয়টি জানান পরপরই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকে তদারকি করতে বলা হয়েছে। এখন থেকে অবরুদ্ধ পরিবারটি স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩জুন বাদ আছর পাশের রানীনগর মোল্লাপাড়া মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুজ্জামান (৫৫) মসজিদে বসে একঘরে করার ফতোয়া জারি করেন। এসময় গ্রাম্য মাতব্বর ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোসাব্বের আলীসহ গ্রামের ৬০-৭০জন উপস্থিত ছিলেন।
ফতোয়ার শিকার পরিবারের এক নারীর (৫০) সাথে তাঁর মেয়ে জামাইয়ের (৩৬) অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে এই ফতোয়া দিয়ে একঘরে রাখার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন গ্রাম্য মাতব্বররা। একই সাথে ওই নারীর মেয়েকে (৩০) তার স্বামীর পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মেয়েটি এখন মায়ের সাথে অবস্থান করছেন।
এ নিয়ে নাটোরের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সজাগ নিউজ ডট কম একটি সংবাদ প্রকাশ করে।
