
এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অন্য কোনো পদে কর্মরত থাকতে পারবেন না। কিন্তু কিছু শিক্ষক একই সাথে শিক্ষকতা এবং সাংবাদিকতা করে আসছে। এতে করে এমপিও নীতিমালা বর্হিভুত হওয়ায় এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের সাংবাদিক পরিচয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা আসছে।
এছাড়াও এমপিওভুক্ত এবং ননএমপিও শিক্ষকরা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা, নিজ নিজ সহকর্মী ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জিম্মি করে রাখেন মর্মে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পাবলিক পরীক্ষার হলেও অবৈধভাবে ঢুকে পড়েন তারা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করায় ১২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শেরপুরের জেলা শিক্ষা অফিস। তারা শেরপুরের বিভিন্ন কলেজ ও মাদরাসায় কর্মরত। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অন্য কোনো পদে কর্মরত থাকতে পারবেন না।
কিন্তু এ ১২জন শিক্ষক সাংবাদিকতায় নিয়োজিত বলে অভিযোগ করেছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের এক সদস্য। তাই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে শেরপুরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান।
তিনি বলেন, আমাদের স্থানীয় সাংবাদিকরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের কাছে এসব শিক্ষকদের বিষয়ে জানিয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। স্কুল-কলেজ, মাদরাসার ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালায় উল্লেখ আছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা একইসাথে একাধিক কোন পদে বা চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। কিন্তু তারা বিধি ভঙ্গ করে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত বলে অভিযোগ তুলেছেন মূলধারার পেশাদার সাংবাদিকরা।
তিনি আরও বলেন, ডিজি মহোদয়ের নির্দেশনায় তাদের শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাবো। কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শোকজ পাওয়া শিক্ষকদের তালিকায় আছেন, শেরপুর সদরের মডেল ডিগ্রি মহিলা কলেজের প্রভাষক মাসুদ হাসান বাদল, নকলার চন্দ্রকোনা কলেজের প্রভাষক মহিউদ্দিন সোহেল, নকলার সরকারি হাজী জাল মাহমুদ কলেজের প্রভাষক ড. মোহাম্মদ আনিছুর রহমান আকন্দ, একই কলেজের প্রভাষক আব্দুল মোত্তালিব সেলিম, শেরপুর সদরের নিজাম উদ্দিন মডেল কলেজের প্রভাষক রীতেশ কর্মকার ও একই কলেজের প্রভাষক মো. মোক্তারুজ্জামান।
শোকজ পাওয়া শিক্ষকদের তালিকায় আরও আছেন শেরপুর সদর উপজেলার ফসিউল উলুম দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. মেরাজ উদ্দিন, আল জামিয়াতুল ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক সাবিহা জামান শাপলা, নকলার বানেশ্বর্দী দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন, কলা পাড়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ, শাহরিয়ার দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ হযরত আলী এবং ঝিনাইগাতির ভটপুর ফাজিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম।
গত ২৩ অক্টোবর এ শিক্ষকদের পাঠানো শোকজ নোটিশে জেলা শিক্ষা অফিস বলছে, এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক কর্মচারী একইসাথে কোনো পদে বা চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। ওই বিধি লঙ্ঘন করে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত আছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। চাকরি বিধি লঙ্ঘনের দায়ে কেনো বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হবে না তার জবাব ১০ নভেম্বরের মধ্যে লিখিতভাবে দাখিল করতে বলা হলো।
