Home সজাগ অনুসন্ধান ওসি মোয়াজ্জেম ঢাকায়, পুলিশ বলেই এত ছাড় ?

ওসি মোয়াজ্জেম ঢাকায়, পুলিশ বলেই এত ছাড় ?

405
0

সোনাগাজীর পলাতক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকায় আছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। কিন্তু তারপরও পুলিশ আইনের নানা অজুহাত দেখিয়ে তাকে ২৪ দিনেও গ্রেপ্তার করেনি। তাই প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ সদস্য বলেই কি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এত সদয়?

ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার কয়েকদিন আগে তাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেছিলো অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা। আর সেই ঘটনায় মামলা করতে গেলে সোনাগাজী থানার তখনকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এই জিজ্ঞাসাবাদ তিনি মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে ভিডিও সামাজিক যোগাযোহ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুন্যালে মামলা করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল ইসলাম সুমন। ১৭ মে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত ওইদিনই ডাকযোগে তা সোনাগাজী ধানায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর শুরু হয় গ্রেপ্তারি পরওয়ানা পাওয়া না পাওয়া এবং তা তামিল নিয়ে নাটক। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ১৭ দিন পর ৩ জুন ফেনীর সোনগাজী থানা তা পাওয়া কথা স্বীকার করে করলেও তার পর শুরু হয় আরেক নাটক।

পরোয়ানা তামিল করবে কে?

পরোয়ানা প্রথমে যায় ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে । কিন্তু ততক্ষণে তিনি আর সোনাগাজী থানায় নেই। নুসরাত হত্যার পর ১০ এপ্রিল তাকে প্রত্যাহার করা হয় রংপুর রেঞ্জে৷ ৮ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাই পরোয়ানাটি ফেনী থেকে রংপুর রেঞ্জে পাঠিয়ে দেয়া হয়। রংপুর রেঞ্জ আবার ওই পরোয়ানটি ফেনীর এসপি অফিসে ফেরত পাঠায়। তাদের কথা মামলায় তার অস্থায়ী ঠিকানা ফেনীর সোনাগাজী থানা। সোনাগাজী থানার এখনাকার ওসি মঈনুদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে জানান,‘ রংপুর থেকে পরোয়ানাটি আবার গতকাল(রবিবার) এসপি অফিসের মাধমে আমাদের থানায় এসেছে। তাকে গ্রেপ্তারে আমরা অভিযান শুরু করেছি।’ রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন,‘ পরোয়ানাটি আমরা ফেনীতে ফেরত পাঠানোর পর তারা কাজ শুরু করেছে। আমার এখানো পরোয়ানাটি তারা কেন পাঠিয়েছিলো তা আমি বলতে পারবো না।’

এদিকে ঢাকায় পুলিশের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওসি মোয়াজ্জেম ঢাকায়ই আছেন। তার অবস্থানও জানা আছে পুলিশের । ওসি মোয়াজ্জেম মে মাসেই বিভাগীয় তদন্ত ও মামলার কাজের কথা বলে ঢাকায় চলে আসেন। সেই থেকে তিনি অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত । তার বাড়ি যশোর সদরের চাঁচড়া এলাকায়। জানা গেছে, তিনি গত কয়েক মাসে বাড়িতে যাননি। এখন তাকে কি প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করা হবে তা নিয়ে কাজ চলছে। সূত্র বলছে তবে ২-১ দিনের মধ্যেই তিনি গ্রেপ্তার হচ্ছেন। ফেনী পুলিশের একটি দল এজন্য এখন ঢাকায় রয়েছে। তাকে পুলিশ সদর দপ্তরে ডেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ফেনী জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হতে পারে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এর(পিবিআই) এসপি আহসান হাবিব পলাশ জানান, ওসি মোয়াজ্জেমকে এখন যেকোনো এলাকার পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে। আইনে বলা হয়েছে। এমনকি সাধারণ মানুষও তাকে ধরে পুলিশে দিতে পারেন। আর এটার মূল দায়িত্ব সোনাগাজী থানা পুলিশের।

ফেনীর সোনাগাজী সার্কেলের এএসপি শফিকুল আহমেদ ভুঁইয়া জনিয়েছেন,‘ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তারে একটি টিম এখন ঢাকায় কাজ করছে।’

পুলিশ বলেই এত ছাড়?

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলার বাদী ব্যরিস্টার সায়েদুল ইসলাম সুমন ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারে পুলিশের এই নাটক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন,‘আদালত রংপুর দিনাজপুর বোঝে না। আদালত তাকে গ্রেপ্তার করতে বলেছেন, গ্রেপ্তার করতে হবে। এটা পুলিশের দায়িত্ব। সাধারণ মানুষ হলে পুলিশ কি এতদিন বসে থাকতো? তিনি পুলিশের লোক বলেই কি তার প্রতি এত সদয় আচরণ!’

Previous articleগভীর রাতে পুকুর খনন বন্ধে ইউএনও’র অভিযান
Next articleওসি মোয়াজ্জেমের বিষয়ে হিলি সীমান্তে সতর্কতা জারি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here