
আশিকুর রহমান আশিক, লালপুর
আর মাত্র ৭দিন পরে দেশ ব্যাপি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হবে। এবার নাটোরের লালপুরে নায্য দামও ক্রেতা না থাকায় কোরবানির পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও খামারীরা।
ঈদ উপলক্ষে লালপুর উপজেলার ৭৭৬ টি ছোট-বড় খামারে দেশী-বিদেশী কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারীরা।ঈদের আর ৬দিন বাকি থাকলেও করোনার প্রাদুর্ভাব ও লাগাতার বৃষ্টির প্রকপে ক্রেতা না থাকায় ও বাজারে পশুর সঠিক দাম না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের পশু ব্যবসায়ী ও খামারীরা।
লালপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে, ‘কোরবানির ঈদ উপলক্ষে লালপুর উপজেলার মোট ৭৭৬টি খামারে ১৫হাজার ৫৮৩টি গরুও ২৫ হাজার ৪১০টি ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে।’
সরেজমিনে উপজেলার বিভন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে,‘ ছোট খামার গুলিতে ৩-৫টা ও বড় খামার গুলিতে ৫-১০টি করে কোরবানি উপযোগী গরু রাখা আছে। খামারীরা এখন পর্যন্ত গবাদি পশু গুলিকে নিরোলশ যত্নে লালন-পালন করছে।
এসময় কথা বলতে চাইলে সজবি হোসেন নামের এক খামারীর বলেন, ‘এবার তার খামারে ঈদ উপলক্ষে ৭টি দেশীয় জাতের গরু প্রস্তুত করেছেন। প্রতিটি গরু ৬৭ হাজার থেকে ১লক্ষ ২০ হাজার
টাকায় কিনে ৮ মাস ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ করে লালন-পাল করেছেন। কিন্তু ঈদের আর ৬দিন বাকি থাকলেও এখনো গরুর কেনার জন্য তেমন কোন ক্রেতা আসেনি। এবার করোনার কারনে বাজারেও গরুর তেমন চহিদা না থাকায় দাম খুব কম।’
তদলু মোল্লা নামের খামারী বলেন, ‘তিনি কোরবানির ঈদে বিক্রয়ের জন্য তার খামারে অনেক যত্নে ৭টি গরু প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু এবার করোনার কারনে কোন ক্রেতা নেই, বাজারে দামও নেই তাই এখন পর্যন্ত বিক্রয় করতে পরেনি। কবে বিক্রয় হবে তাই নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন।’
গরু ব্যবসায়ীরা বলেন,‘গত বছর যে গরু বিক্রি হয়েছে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় এ বছর একই সাইজের গরু বিক্রয় হচ্ছে ৭৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। বিভিন্ন পশু হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ‘ছোট সাইজের একটি দেশীয় গরু ৪০-৫০ হাজার টাকা, মধ্যম সাইজের একটি গরু ৫৫-৬৫ হাজার টাকা এবং বড় সাইজের একটি গরু ১ লাখ থেকে ১ লক্ষ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাগল ছোট সাইজের ৫-৬ হাজার টাকা, মধ্যম ৭-১২ হাজার টাকা এবং বড় সাইজের ছাগল বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ হাজার টাকায়।’
লালপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম ক্রেতা না থাকা ও দাম কমের কথা স্বীকার করে জানান, ‘এবছর খামারীরা তাদের পালনকৃত পশু বিক্রয় নিয়ে অনেকটা বিপদে রয়েছেন। করোনা ও অতিবৃষ্টির কারনে ক্রেতা কম, বাজারেও এবার গরুর দাম কম থাকায় খামারীদের লোকসান গুনতে হবে।’
