
সাইফুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিবেদক:
বৃষ্টির কারনে চলনবিলের বিভিন্ন নদ-নদী এবং খালে কিছু পানি এসেছে। এই সুযোগে জেলেরাও নেমে পড়েছে মা মাছ শিকারে। এক শ্রেণীর অসাধু জেলে নদী ও বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে বাদাই, কারেন্ট ও খোরা জালসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মা মাছ নিধন করছে। আর এসব মাছ সিংড়া মৎস্য আড়ত ও হাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করছে জেলেরা। তবে মা মাছ শিকারে তৎপরতা নেই স্থানীয় মৎস্য অফিস।
সরেজমিনে বুধবার চলনবিল ঘুরে দেখা যায় উপজেলার মৎস্য অভয়াশ্রম দহ, জোড়মল্লিকা, সাতপুকুরিয়া, বিয়াশ ও আত্রাই নদীসহ বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে বাদাই, কারেন্ট ও খোরা জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ডিমে পেট ভরপুর টেংরা, পাতাসী, পুটি, মলা, মাগুড়সহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ প্রকাশ্যে নিধন করছে। কিন্তু সরকারি ভাবে মা মাছ নিধন নিষেধ থাকলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন ডিমে পেট ভরপুর ওই মাছগুলো সিংড়া মৎস্য আড়ত ও আশেপাশের স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। আর ওই মাছ গুলো সরকারি কর্মকর্তারাই বেশী দাম হাকিয়ে কিনে নিচ্ছে।
চলনবিলের নতুন পানিতে মা মাছ শিকার করছেন জেলেরা।
চলনবিলের সিংড়া মৎস্য আড়তে প্রতি কেজি ডিমে ভরপুর টেংরা ৭শ টাকা, মলা ৫শ টাকা, শিং মাছ ৭শ এবং চান্দা, পাতাসী, চিংড়িসহ বিভিন্ন মিশালী ৪ থেকে ৬ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, এসময়টা মাছের প্রজনন কাল। চলনবিলের মা মাছ ধরা না হলে বিলের মুক্ত জলে ডিম ছাড়তো। এতে বিলে মিঠা পানির মাছ কয়েকশ গুণ বৃদ্ধি পেত।
এভাবে মাছ শিকারে ব্যস্ত জেলেরা।
নির্বিকারে মা মাছ নিধনে দেশীয় প্রায় ৩৯ প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। আর এ ব্যাপারে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর সাথে এলাকার এক শ্রেণির অসচেতন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত। তাই তাদের প্রতিহত করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এবিষয়ে নাটোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, চলনবিলের বিভিন্ন পয়েন্টে মা মাছ নিধনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। আর এই বিষয়ে ইতিমধ্যে অভিযানও শুরু করেছেন। তবে এরপর থেকে অভিযান আরো জোরদার করা হবে বলে জানান তিনি।
