Home শিরোনাম চাঁন্দের দেশে যাওয়ার জন্য এই ব্রীজ বানাইছে!

চাঁন্দের দেশে যাওয়ার জন্য এই ব্রীজ বানাইছে!

289
0
ব্রীজে উঠার রাস্তা নাই

নিজস্ব প্রদতবেদক:
নদীর মধ্যে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে ব্রীজ। দু’পাশে নেই কোন সড়ক। ব্রীজে উঠতে হলে লাগে বাঁশের সাঁকো। যে দুর্ভোগের জন্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ব্রীজ দিয়ে ছিলেন, সেই দুর্ভোগ যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। মনে হয় চাঁন্দের দেশে যাওয়ার জন্য এই ব্রীজ বানাইছে। এমন আক্ষেপের শেষ নেই জেলার লালোর ইউনিয়নবাসীর।

সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নের বন্দর-টু-কালিগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন মাঝগ্রাম-গোপালপুর মসজিদ ও কবরস্থানের নিকট সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এক বছর আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় কংক্রিট সেতুতে উঠতে পার হতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো। এ অবস্থায় ‘বাঁশের সাঁকো’ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন মাঝগ্রাম-গোপালপুর গ্রামের জামে মসজিদের মুসল্লিরা ও এলাকার জনসাধারণ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অধিন গ্রামীন রাস্তায় কম ১৫মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের গোপালপুর কবরস্থানের নিকট উপর ৩৬ ফুট সেতু নির্মাণের কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স লোকনাথ এন্টার প্রাইজ উত্তর বড়গাছা, নাটোর। সেতুর নির্মাণ ব্যায় ধরা হয় ২৯লাখ ১৭হাজার ৪শ টাকা।

৩মার্চ বুধবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, কংক্রিট সেতুর দুই প্রান্তে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশ বেঁধে পারাপার এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনসাধারণকে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে ওই সেতু উঠতে ও পার হতে হচ্ছে।

নদীর মধ্যে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে ব্রীজ। দু’পাশে নেই কোন সড়ক। ব্রীজে উঠতে হলে লাগে বাঁশের সাঁকো। যে দুর্ভোগের জন্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ব্রীজ দিয়ে ছিলেন, সেই দুর্ভোগ যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। মনে হয় চাঁন্দের দেশে যাওয়ার জন্য এই ব্রীজ বানাইছে।

মাঝগ্রাম-গোপালপুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ওসমান আলী বলেন, বন্যায় দুর্ভোগ লাঘবে মুসল্লিদের চলাচলের জন্য গোপালপুর চুরামনবাটি মৌজায় একটি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কিন্তু সেতু নির্মাণের ফলে সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটলেও সংযোগ সড়ক থাকায় মসজিদ ও কবরস্থানে আসা শতাধিক মুসল্লিকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পরে সেতুর দু’পার্শ্বে নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলামের সহধর্মিনী জলি বেগম বলেন, প্রায় এক বছর হল সেতু নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে উঠতে পাশবর্তী গৃহিণী আয়েশা বেগম ও তার শিশু ছেলে-মেয়ে পানিতে পড়ে আহত হয়েছেন। প্রায় সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত সেতুর পাশে মাটি ভরাটের দাবি জানান তিনি।

মেসার্স লোকনাথ এন্টার প্রাইজ এর সত্ত্বাধিকারী বিধান সরকার এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, সেতুটির নির্মাণ কাজ অনেক আগেই শেষ হলেও বরাদ্দ এবং মাটি সমস্যার জন্য সংযোগে মাটি ভরাট করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় লালোর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারের উদাসীনতার কারণে সেতুটি অকেজো হয়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আর এখানে কোন মাটির সমস্যা সেই বলে জানান তিনি।

সিংড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার জানান, সেতু নির্মাণের প্রায় এক বছর হলেও বরাদ্দ না থাকায় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৭লাখ ২২হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। তবে দ্রুতই সেতুর দুই পাড়ে মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে।

Previous articleবড়াইগ্রামের গোপালপুর ইউপির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান আজিজ
Next articleকাঁদা খোঁচা চলনবিলে এখন পাঁকা রাস্তা–আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here