
মাহবুব হোসেন:
সরকার দেশের খাস জলাশয় ও জলমহালগুলো প্রকৃত মৎস্যজীবীদের অনুকুলে বন্দোবস্ত প্রদানে অগ্রাধিকার দেয়া এবং রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি সহ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে জনস্বার্থে জলমহাল নীতিমালা ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়ন করে ২০০৯সালে।
এই নীতিমালার ১৫ (ঘ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সর্বসাধারনের ব্যবহার্য বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গোরস্থান, পাবলিক ইজমেন্টের (জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট) জন্য ব্যবহৃত জলাশয়সমূহ বন্দোবস্তের বাহিরে থাকবে।
সরকারী কৌসুলি আসাদুল ইসলামের মতে, মামলাকারীরা এই অনুচ্ছেদের সুযোগটিরও অপব্যবহার করছেন।
পুকুরের পানি সেচ কাজে ব্যবহার দেখিয়ে নাটোরে দুই শতাধিক খাস পুকুর দখল!
অ্যাডভোকেট প্রসাদ তালুকদার বাচ্চা নাটোর জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি মনে করেন, মূল বাধা হচ্ছে আরএস রেকর্ডেও মন্তব্য কলামে থাকা কথাগুলো। এই কলামে যতদিন জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহারের জন্য বন্দোবস্তের বাইরে রাখার কথা থাকবে, ততদিন তা রাখতে হবে বলে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। অথচ সুযোগটির ব্যাপক অপব্যবহার করা হচ্ছে।
আরএস রেকর্ডে ‘মন্তব্য’ কলামের অপব্যবহারে খাস পুকুর দখল!
অ্যাডভোকেট প্রসাদ তালুকদারের মতে, প্রতিটি পুকুরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জেলা প্রশাসকের অনুমোদনক্রমে ভূমি কর্মকর্তারা মিস-মামলা করে দলিলের মন্তব্য কলামে থাকা শব্দগুলো বাদ দিতে পারেন। এখানে সংশোধন না করলে এই অপব্যবহার কমানো যাবে না। গ্রামের প্রভাবশালীরা খাসপুকুর দখল করে লাভবান হতেই থাকবেন। জনস্বার্থ আর প্রকৃত মৎস্যজীবীর স্বার্থ জলে যাবে।
ইউসুফ আলী একাই দখল করেছেন সরকারী সাতটি খাস পুকুর!
তবে দখল বা মামলায় স্থিতিবস্থা জারি করা পুকুরগুলোর তালিকা তৈরী শুরু করেছে নাটোর জেলা প্রশাসন।
খাস জলাশয় ও জনস্বার্থ নিয়ে কাজ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, স্থিতিবস্থায় জনস্বার্থ রক্ষা পাচ্ছে না, একই সঙ্গে সরকারেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রক্ষকে প্রতিটি পুকুর জরিপ করে প্রমান করতে হবে। তারপর দেখতে হবে জনস্বার্থ রক্ষা করে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। জনস্বার্থে অগ্রাধিকার কি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
