
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারী খাল দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল প্রভাবশালীরা। যার কারণে ৫টি বিলে ছিল জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে ঠিকমত ফসল ঘরে তুলতে পারতো কৃষকরা। জলাবদ্ধার পানি যেন ছিলে এক একটি কৃষকের চোখের কান্নার পানি। কিন্তু প্রভাবশালীদের সেই দখল করা বলদ খাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম মুক্ত করায় এবার বোরো ধান চাষ করেছিল কৃষকরা। বাম্পার ফলনে সেই সব কৃষকের মুখে যেন হাসি ফুটেছে।
কৃষকরা জানান, নাটোর সদর উপজেলার ৩নং দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের পদ্মবিল, কাকবাড়িয়া, দিয়ারপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, গাঙ্গইল বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ছিল বলদ খাল। কিন্তু সেই খাল অবৈধ ভাবে প্রভাবশালীরা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছিল। ফলে প্রায় ২ হাজার বিঘা জমির ফসল অনিশ্চিতের মুখে পড়েছিল। দিশেহারা হয়েছিল ওই অঞ্চলের কৃষকরা। কোন দিশা না পেয়ে বিষয়টি নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলমকে অবগত করেন তারা। পরে ইউএনও তাৎক্ষণিক ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তারই সুফল হিসাবে কৃষকরা প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ২৭ মন হারে ধান উৎপাদন করেছেন।
কৃষকরা আরও জানান, সময় মত যদি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ, অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার না করতেন, তবে তারা তাদের ঘরে এই সোনার ফসল তুলতে পারতেন না।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের গত ৫ জানুয়ারি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বরাবর অভিযোগ করেন, পদ্মবিল সহ ৫টি বিলের ভুক্তভুগী কৃষকরা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবৈধ দখলদারদেরকে উপজেলায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও। অবৈধ দখলদাররা মাছ স্থানান্তরের জন্য ইউএনও’র নিকট আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন তিনি।
কিন্তু প্রভাবশালীরা পানি নিষ্কাশনের পথ উন্মুক্ত না করায় পেরিয়ে যাচ্ছিল বোরো ধানের বীজতলা বপনের সময়। পরে ইউএনও রাতভর অভিযান পরিচালনা করে, ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধ বাঁধ ভেঙ্গে দেন। ফলে বিলের পানি নিষ্কাশন হওয়ার কারণে কৃষকরা বীজ বপন করেন। তারই সুফল হিসাবে কৃষকরা বোরো ধান উৎপাদন করতে পারায় সোনালী ফসল এখন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। ফলনও হয়েছে প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ২৭ মন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভুক্তভুগী কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলদ খাল উদ্ধার করা হয়েছে। সে সাথে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। কৃষকরা সময় মত অভিযোগ করেছিলেন বলেই তাৎক্ষণিকভাবে অবৈধ দখলদাদের উচ্ছেদ করে পানি নিষ্কাশন করা হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে যদি কেউ এ ধরনের অবৈধভাবে পানি নিষ্কাশনের পথে বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
