Home জেলা সংবাদ জাকিরের আম চিঠিতে মুগ্ধ সবাই

জাকিরের আম চিঠিতে মুগ্ধ সবাই

581
0

মোঃ ফজলে রাব্বিঃ
কবুতরের পায়ে চিঠি পাঠানোর দিন কবেই শেষ হয়েছে। কাগজের চিঠির দিনও প্রায় শেষ। এখন চলছে ই-মেইল, ফেসবুকসহ ইন্টারনেট ভিত্তিক বার্তার যুগ। তবে নাটোরের লালপুর উপজেলার লক্ষণবাড়িয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক জাকির হোসেন চিঠি লেখার এই রীতি ধরে রাখার জন্য এক অভিনব উপায় বের করেছেন।
তিনি প্রতি বছর আমের মৌসুমে মানুষকে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানান। তবে এই চিঠি রাজা-বাদশাদের মতো রেশমি কাপড়েও নয়, কাগজেও নয়। তিনি চিঠি লেখেন আস্ত আমের গায়ে। লিখে আমটিই পাঠিয়ে দেন প্রাপকের কাছে। তিনি এর নাম দিয়েছেন ফলের শুভেচ্ছা। ২০ বছর ধরে তিনি এ কাজটি করছেন। তিনি তার সব চিঠির প্রাপককেই লেখেন চিঠিটা পড়া হলে আমটা কেটে খাবেন।
জাকিরের এমন আম চিঠিতে মুগ্ধ হচ্ছে সবাই।
সম্প্রতি বাগাতিপাড়ায় এসেছিলেন স্থানীয় এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলকে তার আম চিঠি পৌঁছে দিতে। উপজেলার সান্ন্যাল পাড়ার বাড়িতে তিনি আম চিঠি পৌঁছে দেন। এরপর তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম গকুলকে এবং নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পালকে তাঁদের স্ব-স্ব কার্যালয়ে গিয়ে একটি করে আম চিঠি তাঁদের হাতে তুলে দেন। এসময় এই ব্যতিক্রমী চিঠি প্রসঙ্গে আলাপচারিতায় শৌখিন অথচ অভিনব চিঠির লেখক জাকির হোসেন জানালেন নানা কথা।
১৯৯৯ সাল থেকে প্রতিবছর এভাবে আমের গায়ে মনের কথা লিখে বিলিয়ে দেন প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব লেখক-সাহিত্যিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন এলাকার বিশিষ্টজনদের কাছে। সবুজ আমের বুকে লাল বৃত্ত খচিত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সাজে তিনি পাঠান এ আমের চিঠি।
প্রতিবছর গাছে আম বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তার চিঠি লেখার পালা। কখনও নিজ হাতে আবার কখনও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন আমের গায়ে লেখা চিঠি। জাকির হোসেনের শখ ‘আমচিঠি’ তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকেও দিতে চান। প্রতিবছর উদ্যোগ নেন। কিন্তু আমের গায়ে চিঠি লিখে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ঠিকানায় কুরিয়ার সার্ভিসে দিতে গেলে তা কুরিয়ার সার্ভিস গ্রহণ করে না।
আম চিঠি পেয়ে এমপি শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, জাকিরের এই অদ্ভুত উদ্যোগ তাঁকে মুগ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, কাঁচা সবুজ আমের বুকে লাল বৃত্ত্ব খচিত আম চিঠি হতে পারে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজের পতাকা। হতে পারে সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম গকুল তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, চিঠি লেখা সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে জাকিরের নীরব আন্দোলনের মত এমন ব্যতিক্রমী কর্মকান্ড এর আগে কখনও দেখেননি। তিনি আম চিঠির মাধ্যমে এই এলাকার আমের ঐতিহ্যকেও তুলে ধরছেন বলে জানান। অন্যদিকে নবাগত ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল আম চিঠি পেয়ে বেশ খুশি হন।

Previous articleবিদেশে নারীকর্মীদের আত্মহত্যার কারণ ‘অজানা’
Next articleনাটোরে মাস ব্যাপী আবাসিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের সনদ বিতরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here