
জারুল ফুলে বাতাস দোলে, রুপে ভরে মন
বন বনানী মাতোয়ারা তাই, ভ্রমরার গুঞ্জন।
সাজ সাজ রব চারিদিকে যেন, কিসের আগমনে
সুনিপুন এক কারিগর যেন, মায়ার সুতোয় বুনে।
নীল আকাশের নীল রঙ হতে, কিছুটা রঙ নিয়ে
দুধ সাদা ঐ সুভ্রতারই পবিত্রতায় মিশিয়ে।
সবুজ শাখে আলপনা এঁকে, তারার মেলার টানে
বাতাস যেন ঢেউ তুলতে, আসে সেথা আনমনে।
ছোট পাখি সব বিহবল হয়ে, সুমধুর সুরে সুরে
ডালে ডালে তারা উৎসব করে,সকাল দুপুর ঘুরে।
কচিপাতা গুলি ঢাকা পড়ে আছে, শুভ্র রঙের নীলে
অপরুপ এক মোহনিয়তা, সৃজিছে দুয়ে মিলে।।
জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে জারুলের সন্ধান মেলে। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। মাঝারি আকৃতির এই বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখাময়। এর লম্বাটে পাতাগুলো পত্রদণ্ডের বিপরীতে সাজানো থাকে। এই পাতাঝরা বৃক্ষ শীতকালে পত্রশূণ্য অবস্থায় থাকে। বসন্তে নতুন গাঢ় সবুজ পাতা গজায়। গ্রীষ্মে ফোটে অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল। জারুল ফুলগুলো থাকে শাখার ডগায়, পাতার ওপরের স্তরে। প্রতিটি ফুলের থাকে ছ’টি করে পাঁপড়ি, মাঝখানে পুংকেশরের সাথে যুক্ত হলুদ পরাগকোষ। গ্রীষ্মের শুরুতেই এর ফুল ফোটে এবং শরত পর্যন্ত তা দেখা যায়।
জারুল এর ইংরেজি: Giant Crape-myrtle, Queen’s Crape-myrtle, Banabá Plant, Pride of India; বৈজ্ঞানিক নাম: Lagerstroemia speciosa বাংলাদেশের নিম্নভূমির একান্ত অন্তরঙ্গ তরুদের অন্যতম। লেজারস্ট্রমিয়া গণের এই উদ্ভিদ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রজাতি। জারুলের ফুলের বেগুনি বর্ণ যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি শোভন-সুন্দর তার পাঁপড়ির নমনীয় কোমলতা।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের থরে থরে ফুটেছে জারুলের নীলশুভ্র পুষ্পমালা। ডালে ডালে নীলাভ বেগুনী ফুলের শোভায় মাতোয়ারা এখন শিশু, নারী ও দর্শনার্থীগন। নয়নাভিরাম এই স্বর্গীয় প্রকৃতি উপভোগ্য এখন এই সৌন্দর্যপুরীতে।
