Home শিরোনাম তিন ভয়ংকর খুনির দু’জনকে খুঁজছে নাটোর পুলিশ

তিন ভয়ংকর খুনির দু’জনকে খুঁজছে নাটোর পুলিশ

1764
0

মাহবুব হোসেন:
নাটোরে একের পর এক ঘটছে মোটরসাইকেল ছিনতাই। সে সাথে খুনিদের গুলিতে জীবন যাচ্ছে চালকের। শুক্রবার ৫জুলাই কলেজ ছাত্র আল আমিনকে গুলি করে হত্যার পর বিষয়টি আবারও জেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে খুনিরা সাধারণ খুনি নয়। এরা প্রশিক্ষিত।

এরআগে গত ১২জুন লালপুরের আলোক বাগচি নামে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার পর যে ভাবে মোটরসাইকেল ছিনতাই করা হয়, ঠিক একই ভাবে কলেজ ছাত্র আল আমিনকে গুলি করে হত্যার পর মোটরসাইকেল ছিনতাই করা হয়েছে।

মুলত সংঘবদ্ধ তিনজন ভয়ংকর খুনি লালপুর এবং বড়াইগ্রাম এলাকায় এই কাজ করছে। যাদের দুজনের বাড়ি পাবনা সদরে এবং একজনের বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলায়।

তবে আশার কথা হচ্ছে, ভয়ংকর তিন খুনির মধ্যে গতরাতে পাবনা সদর থেকে কলেজ ছাত্র আল আমিন হত্যার সাথে জড়িত এক খুনিকে গ্রেফতার করেছে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ওই তিন খুনিই অংশগ্রহন করে।


ছবিতে বাংলাদেশের জার্সি পড়া ভাগ্নের সামনে কলেজছাত্র আল আমিনকে হত্যা করে তারা।

একজন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও বাঁকি দু’জনকে ধরতে মাঠে নেমেছে বড়াইগ্রাম এবং লালপুর থানা পুলিশ। বর্তমানে বড়াইগ্রাম থানার দুটি টিম এবং লালপুর থানার একটি টিম কাজ করছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই বাঁকি দুজন খুনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে বলে জেলা পুলিশের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এমন দাবী করেছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, তিনজন সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী যাদের বাড়ি পাবনা সদর এবং ঈশ্বরদী উপজেলায়। এই তিনজন মুলত ঈশ্বরদীর কোন এক স্থানে লুকিয়ে থাকে। তারা বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে একসাথে তিনজনই অংশগ্রহন করে।

পুলিশের একটি সুত্র বলছে, লালপুর এবং বড়াইগ্রাম ঈশ্বরদী থেকে যোগাযোগে কাছে হয়। যার কারনে এই দুই উপজেলায় মোটরসাইকেল বা অন্য যানবাহন ছিনতাই করে দ্রুত তারা পালিয়ে যায়। এই সংঘবদ্ধ চক্রটি দুপুর ১২টার পর থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে অপরাধ সংঘঠিত করে। কারণ এই সময় রাস্তা ফাঁকা থাকে। আর ফাঁকা থাকার সুযোগেই তারা অপরাধ সংঘঠিত করে। এই চক্রটি নাটোর ছাড়াও পাবনা এবং কুষ্টিয়া একই কাজ করে। তাদের একেক জনের নামে বিভিন্ন থানায় সাত থেকে অন্তত ১০টি করে মামলা রয়েছে।


আল আমিনের মায়ের আহাজারি। এমন ভাবে যেন অকালে প্রাণ দিতে না হয় কারও।

সূত্র জানায়,দীর্ঘ দিন ধরে এই তিন ভয়ংকর খুনি নাটোর অঞ্চলে অপরাধ সংঘঠিত করে আসছে। ২০১৫সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অন্তত ৫টি ছিনতায়ের ঘটনায় কলেজ শিক্ষক সহ ৪জনকে গুলি করে তারা হত্যার পর মোটরসাইকেল ছিনতাই করেছে। আর ২০১৭সালের ১৯ জানুয়ারী ভাগ্যক্রমে রেজাউল ইসলাম নামে একটি কীটনাশক কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি প্রাণে বেঁচে যান। তবে তিন খুনির গুলি করার ধরন,ছিনতাইয়ের সময় সম্প্রতি সব কয়টি ঘটনার সাথে মিল পাওয়া গেছে। এরা মুলত মৃত্যু নিশ্চিত করেই ছিনতাই করে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)দিলীপ কুমার দাস বলেন, গত ১২ জুন লালপুরে আলোক বাগচি নামের একজনকে গুলি করে যে ভাবে হত্যা নিশ্চিত করা হয়েছে, একই ভাবে কলেজ ছাত্র আল আমিনকে হত্যা করা হয়েছে। বুকের বাম পাশে একটিমাত্র গুলি করে তারা মৃত্যু নিশ্চিত করে। যেটা অলক বাগচির ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল। আমরা এই চক্রের একজন সদস্যকে গ্রেফতার করতে পেরেছি, বাঁকি দু’জনকে আটক করার চেষ্টা চলছে।

জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন,ঈশ্বরদীর একটি গ্যাং নাটোর অঞ্চলে এসে অপরাধ সংঘঠিত করছে যেটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। খুব শিঘ্রই এই গ্যাংয়ের সকল সদস্যকে আইনের আওয়তা আনা সম্ভব হবে। তাদের আটক করতে পারলে নাটোরে আর এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না।

অনুমতি ছাড়া নিউজ কেউ কপি করবেন না

Previous articleশুরু হচ্ছে দুদিনব্যাপী প্রিমিয়ার ব্যাংক এডু ফেস্ট ২০১৯
Next articleবাগাতিপাড়ায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে পড়ে রাজমিস্ত্রির মৃত্যু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here