
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ার নাগরনদে সুঁতি জাল দিয়ে নির্বিচারে পোনা ও মা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী শিকার করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা-কর্মীরা উপজেলার ১১নম্বর ছাতারদীঘি ইউনিয়নের বাশারনগর-লালপাড়া ও ধরমপুর এলাকায় নাগরনদের পাশাপাশি ২টি পয়েন্টে নদী জুড়ে এই অবৈধ সুঁতি জাল দিয়েছে।
এতে করে পোনা মাছ ও জলজ প্রাণী শিকারের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে চলনবিলের জীববৈচিত্র। অন্যদিকে নদীর পানির স্রোতে শত শত ঘর-বাড়ি ভেঙে যেতে বসেছে।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, অবৈধ সুঁতি জালের কারনে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি চলনবিলের জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে প্রভাবশালীরা।
মৎস্যভান্ডার খ্যাত হিসেবে পরিচিত সিংড়ার নাগরনদ ঘুরে দেখা যায়, বাশারনগর-লালপাড়া ও ধরমপুর এলাকায় নাগর নদী জুড়ে ২টি পয়েন্টে বাঁশের বাঁধ ও সুঁতিজাল দিয়ে ছোট-বড় সব ধরণের মাছ, কাঁকড়া, শামুকসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী নিধন করা হচ্ছে। এই সুঁতিজাল এতটাই সুক্ষ যে জলজ কীটপতঙ্গ পর্যন্ত আটকা পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাশারনগর-লালপাড়া এলাকায় নদী দখল করে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সেন্টু ও ওমেজ উদ্দিন। নদের ধরমপুর এলাকায় নদী দখল করে মাছ শিকার করছেন জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তি বকুল হোসেন ও মোস্তা।
কথা হয় বাশারনগর গ্রামের সুমি বেগম এর সাথে, তিনি জানান, এই নদীর সুঁতির কারণে এলাকার আজ শতাধিক বাড়ি-ঘর হুমকির মুখে পড়েছে। আর সিংড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানকার কেউ খবর রাখে না বলে জানান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ বলেন, তার এলাকায় নাগরনদের পানি আটকিয়ে দুটি সুঁতি চলছে তিনি শুনেছেন। এতে একটি মসজিদসহ বেশকিছু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থও হচ্ছে। আর এবিষয়টি তিনি প্রশাসনকে অবগতও করেছেন।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, নাগর নদীতে বাঁধ ও সুতিজাল দিয়ে এভাবে পানি আটকে মাছ, কাঁকড়া, শামুকসহ ছোট পোকামাকড় ও জলজ প্রাণী শিকারে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা এলাকাবাসীকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। তবে এর সাথে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় এটা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সেন্টু ও ওমেজ উদ্দিন মোবাইল ফোনে সুঁতি দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সুঁতিজালের টাকা স্থানীয় মসজিদের উন্নয়ণ ফাণ্ডে ব্যবহার করা হয়।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার বলেন, এইভাবে সুঁতি জাল দিয়ে কেউ যদি মাছ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে থাকে তাহলে দ্রুতই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
