
নাটোরের রাজ বংশের অন্যতম রাজা যোগেন্দ্রনাথ রায় । ইতিহাসে এই যোগেন্দ্রনাথ রায-ই নাটোরের পাগলা রাজা নামে পরিচিতি পাই। মুলত তার খেয়াল খুশির জন্যই তাকে পাগলারাজা বলা হতো । কিন্তু আসলে তিনি ছিলেন সৎ, নিষ্ঠাবান, প্রজাহিতৈষী, তেজষী, প্রতাপশালী রাজা । সবকিছুকে সহজে মেনে নেওয়ার মতো মানুষ তিনি ছিলেন না । তার খেয়াল খুশির পাগলামিকে কেন্দ্র করে অনেক গল্প নাটোরে প্রচলিত আছে। যা আজো নাটোরের প্রবীন ব্যক্তিদের কাছে শোনা যায় । ১৮৭৬ সালে নাটোরে রেলপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয় । সেই সময় দার্জিলিং মেইল ট্রেন কলকাতা থেকে দার্জিলিং যেত নাটোরের উপর দিয়ে । কিন্তু নাটোরে থামতোনা । হঠাৎ একদিন রাজা যোগেন্দ্রনাথ মনে করলেন যে ট্রেনটি তার মাটির উপর দিয়ে চলাচল করছে আর এখানে থামবেনা তা হতে পারে না। তিনি রাজবাড়ি থেকে তার হাতি এনে ট্রেন লাইন ওঠাতে শুরু করেন । বন্ধ হয়ে গেল নাটোরের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল । সেই সময়ের ব্রিটিস সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরে নাটোরে দার্জিলিং মেইল ট্রেন সহ সকল ট্রেন থামানো stoppage অনুমোদন করে। তারপর নাটোর থেকে কোলকাতা সহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত সহজতর হয় । সেই আমলে কেউ প্রথম শ্রেণীর টিকিট কিনলে উক্ত যাত্রীর জন্য ট্রেন কিছু সময় বিলম্ব করতো । রাজা যোগেন্দ্রনাথ মাঝেমধ্যে ত্র খেয়ালবসত টিকিট কিনে বাড়ীতে বসে থেকে শুধু শুধু ট্রেন লেট করাতেন। এই প্রচলিত ছোট গল্পোটি করার উদ্দেশ্য পঞ্চগড় থেকে ট্রেন ছেড়ে নাটোরের উপর দিযে ঢাকায় পৌছবে অথচ নাটোরে থামবে না এটা হতে পারে না । আসুন সময়ের চাহিদা অনুযায়ী আমরা নাটোরবাসী হিসাবে দাবি তুলি পঞ্চগড় থেকে ঢাকা,ঢাকা থেকে পঞ্চগড় গামী বিরতিহীন ট্রেনটি নাটোরে stoppage দিতে হবে । নতুবা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হলেও হতে পারে ।
লেখক: শংকর দাস, সাংস্কৃতিক কর্মী।
