
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে কাজের মান দেখছেন পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা। তার সামনেই ঠিকাদার রাস্তার ওপর রাবিশ দিয়েই (অতিনিম্নমানের ইট) রোলার করছে। সঙ্গে সঙ্গে বালু দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই দীর্ঘ দিন পর সংস্কার কাজ হচ্ছে নাটোর পৌরসভার চাল পট্টির রাস্তা। চোখের সামনে নিম্নমানের কাজ দেখে ঠিকাদারের ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করছে না। অনেকে আপেক্ষ করে বলছে, দীর্ঘ ১৪-১৫বছর পর কানাইখালি চালপট্টির এই রাস্তার সংস্কার কাজ হচ্ছে। যেখানে চলাচল করা যায়না, সেখানে নিম্নমানের কি, আর ভাল মানের কি। অন্তত কাদা থেকে বাচা যাবে?
পৌরসভা সূত্র জানায়, সম্প্রতি নাটোর পৌরসভা, শহরের কানাইখালি চালপট্টি থেকে জেলেপাড়া পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজের টেন্ডার দেয়। ৩’শ মিটার এই কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১লাখ টাকা। আর রাস্তাটি সংস্কার কাজ পেয়েছেন নাটোর শহরের স্টেশনবাজার এলাকার ঠিকাদার আব্দুল আজিজ।
পৌরসভা সূত্র আরও জানায়, রাস্তাটি এক নম্বর ইট দিয়ে প্রথমে ডাব্লিউবিএম করার কথা। এরপর কার্পেটিং। কিন্তু ডাব্লিউবিএম এ অতিনিম্নমানের ইট দিয়ে করার কারনে রোলার করার সময়ই উঠে যাচ্ছে অনেক ইট। আবার পানি দেওয়ার কারনেই গলে যাচ্ছে। এই অবস্থায় রাস্তাটি টেকসই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে কাজের মান তদারকি করছেন নাটোর পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা। এসময় ঠিকদারের লোকজন রাস্তায় রাবিশ ছিটিয়ে (অতিনিম্নমানের ইট) দ্রুত রোলার করে বালু দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে। তবে কাজের তদারকরি করার যার দায়িত্ব সেই প্রকৌশলী ফেরদৗস আলম ছিলেন না। তার অনুপস্থিতিতেই কাজ চলছে জোরেশোরে। কত নম্বর ইট দিয়ে রাস্তার কাজ হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে, রাস্তায় চলাচালকারী এবং প্রকৌশলীরা কেউ সদুত্তর দিতে পারেনি।
এই রাস্তায় চলাচলকারী অ্যাডভোকেট মুক্তার হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৪-১৫বছর পর রাস্তার সংস্কার কাজ হচ্ছে। এই রাস্তা নিয়ে অনেকবার লড়াই করেছি। নিম্নমানের কি আর ভাল মানের কি, কাঁদা থেকে বাঁচলেই হল।
সরেজমিনে দাঁড়িয়ে থাকা নাটোর পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা কে রাস্তার নিম্নমানের কাজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রাস্তার ডাব্লিউবিএম কমপ্যাক্ট করার জন্য রাবিশ দিয়ে করা হচ্ছে। তাছাড়া ভাল কমপ্যাক্ট হবে না। এটা নিম্নমানের কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই কাজের দায়িত্বে রয়েছেন অন্য প্রকৌশলী তিনি ভাল বলতে পারবেন।
নাটোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম শাহিন বলেন, সকালে রাস্তার কাজ দেখে ঠিকাদারকে ভালমানের খোয়া দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। রাবিশ দিয়ে নয়, এক নম্বর ইটের খোয়া দিয়েই কমপ্যাক্ট করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। যদি রাবিশ দিয়ে করে থাকে তাহলে ঠিকাদার ঠিক করেনি।
নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরি জলি বলেন, রাস্তার কাজ আমি পরিদর্শন করেছি, সেখানে ভাল মানের কাজ হচ্ছে। তবে কোন খারাপ কাজ হলে এর দায় দায়িত্ব প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারদের। তাছাড়া নিম্নমানের কাজ প্রমান হলে ঠিকাদারকে কারণ দর্শানো হবে।
তবে নিম্নমানের কাজের বিষয়ে ঠিকাদার আব্দুল আজিজের সেল ফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
ভিডিও দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন:
বিজ্ঞাপন:
