
সিংড়া প্রতিনিধি:
নাটোরের সিংড়ায় পিটিয়ে সিফামনি (১০) নামে তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর হাত ভাঙ্গার ঘটনায় একান্নবিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম ফরহাদুল আলমের বিরুদ্ধে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করেছে শিক্ষা বিভাগ।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসাইনকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্কুল ভবনের ২য় তলায় বইখাতা রেখে নিচে খেলাধুলা করতে থাকে কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসময় প্রধান শিক্ষক এস এম ফরহাদুল আলম লাঠি দিয়ে সবাইকে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিফামনির হাতে প্রচন্ড লাগে। পরে পরিবারের লোকজন নাটোরে হাড়-জোড়ারোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলামের নিকট নিয়ে গেলে পরিক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যায় সিফামনির হাত ভেঙ্গে গেছে।
ভূক্তভোগী সিফামনির মা তাছলিমা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মেয়েকে অন্যায়ভাবে মারা হয়েছে। শিক্ষকদের কাছে পাঠাই ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য কিন্তু শিক্ষকরাই ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিচ্ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
বন্যা নামের ৫ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানায়, বৃহস্পতিবারে আমাকেও মেরেছে স্যার, সেদিন থেকেই জ্বরে ভূগছি।
স্থানীয়রা জানায়, কিছুদিন আগে রুহুল ইসলাম নামের তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মাথায় আঘাত করেছে প্রধান শিক্ষক এসএম ফরহাদুল আলম। এছাড়া গত জানুয়ারি মাসে স্কুলের ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে ডেকোরেটর ভাড়া না দিয়ে ডেকোরেটর মালিককে মারপিট করার অভিযোগও রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১লা জুলাই সন্তানদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ নিয়ে থানায় যান প্রধান শিক্ষক এসএম ফরহাদুল আলমের পিতা বিলদহর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ওরফে পরাণ। তৎকালীন ওসি মনিরুল ইসলামের কাছে ভুল স্বীকার করে পিতার দেখভালের দায়িত্ব নেন প্রধান শিক্ষকসহ তিন ভাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এসএম ফরহাদুল আলমের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, তদন্ত কমিটির সদস্যরা তার স্কুলে এসেছেন, পরে কথা বলবেন বলে কল কেটে দেন। পরে কয়েকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী আশরাফ জানান, এ ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে
