
নিজস্ব প্রতিবেদক:
শস্য ভান্ডার খ্যাত হিসেবে পরিচিত নাটোরের সিংড়ার ফেরীঘাট এলাকায় মহাসড়কে ধান হাটের কারণে সপ্তাহে দু’দিন প্রায় ৫কিলো মিটার এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয় যানজট। ফলে মহাসড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে পড়ে শত শত যানবাহন। এতে নাটোর-বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর এমনিতেই হাটের জায়গা সংকীর্ণ তারপরও সড়কের দু’পাশ্ব জুড়ে প্রভাবশালীদের খড়ির আড়ৎ ও বালু এবং ‘স’ মিলের ব্যবসার কারণে যাত্রী ও ধান বিক্রেতারা চরম ভোগান্তিতে পড়ে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
সূত্রে জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া পৌর শহরের বাসষ্ট্যান্ড-ফেরীঘাট এলাকায় সপ্তাহে দু’দিন সোম ও বৃহস্পতিবার মহাসড়কের পাশ দিয়ে বসে ধান হাট। আর এই হাটে চলনবিলের লক্ষাধিক কৃষক তাদের ফসল বিক্রয় করতে আসে। কিন্তু হাটের জায়গা সংকীর্ণ হওয়ায় মহাসড়কের ওপরই চলে দিনব্যাপি ধান কেনাবেচা। এছাড়াও হাটের মহাসড়কের এক পার্শ্ব এলাকা জুড়ে দীর্ঘ দিন ধরে দখল করে ‘স’ মিলের ব্যবসা পরিচালনা করছে প্রভাবশালী জহুরুল ইসলাম ও জনৈক বলরাম এবং অন্য পাশে বালু ব্যবসা করে আসছে স্থানীয় দুই বালু ব্যবসায়ী রফিকুল ও আমিনুল ইসলাম।
ফলে ধান বহনকারী শতশত ভটভটি, নসিমন, আটোভ্যান রাস্তার ওপর রাখায় মহাসড়কের অর্ধেক অংশই দখল হয়ে যায়। এতে উত্তরাঞ্চল রংপুর, বগুড়া ও দক্ষিণাঞ্চল নাটোর-রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া থেকে আসা শত শত বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন সিংড়া ফেরীঘাট এলাকায় এসে আটকা পড়ে। সৃষ্টি হয় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের শেরকোল থেকে জামতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে যানজন। আর এ কারণে জরুরী রোগী, চাকুরীজীবি ও শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চলাচল বাঁধাগ্রস্থ হয়।
এবিষয়ে সোমা পরিবহনের বাসের চালক বলেন, সোম ও বৃহস্পতিবার সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে ২ থেকে ৩ ঘন্টা যানজনে আটকে পড়ে থাকতে হয়। মাঝে মাঝে যানজটের তীব্রতা বেড়ে যায়। যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়ে যায়।
হিয়াতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, শোলাকুড়া গ্রামের কৃষক আবু তাহের সহ কয়েকজন কৃষক বলেন, জায়গা না থাকায় তারা রাস্তার ওপরেই ভ্যান রেখে ধান বিক্রয় করছেন। আর হাটের জায়গা সংকীর্ণ হওয়ায় অর্ধেক দামেই তাদেরকে অনেক সময় ধান বিক্রয় করতে হয় বলে তারা অভিযোগ করেন।
নাটোর জেলা মটর মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম বলেন, এখানে হাটের জায়গা সংকীর্ণ ও সড়কের পার্শ্ব দখলের কারণে মহাসড়কে ওপরই ভ্যান ও নসিমন রেখে ধান কেনা বেচা শুরু হয়। ফলে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত সিংড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় যানজটে হাজারও যানবাহন আটকে পড়ে। এতে অসুস্থ্য রোগী সহ অফিস ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এখন জনগণ দ্রæত এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চায়।
সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হাটের জায়গা সংকীর্ণ হওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আর হাট এলাকায় অবৈধ দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করতে মাইকিং ও নোটিশ করা হয়েছে। এখন ভোগান্তি কমাতে পৌর কর্তৃপক্ষ সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো হাটের পাশে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
