Home জেলা সংবাদ মায়ের অন্যের বাড়িতে কাজের ২’শ টাকা নিয়ে লাইনে দাঁড়ায় সাদিয়া

মায়ের অন্যের বাড়িতে কাজের ২’শ টাকা নিয়ে লাইনে দাঁড়ায় সাদিয়া

701
0

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বড় দুলাভাই দুই’শ টাকা দেওয়ার পর সে টাকা দিয়েই আবেদন করি। যে দিন লাইনে দাঁড়াবো, সে দিন মায়ের অন্যের বাড়িতে কাজ করে আনা দুই’শ টাকা নিয়ে নাটোরে গিয়ে পুলিশের লাইনে দাঁড়াই। এরপর শারীরিক, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। এখন চাকুরি পাওয়ার পর মনে হচ্ছে মায়ের দুই’শ টাকাই আমার জন্য আর্শ্বিবাদ হয়ে দাঁড়ায়।

হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে হিসেবে চাকুরিটা পাওয়া মানে আমার কাছে পৃথিবী হাতের মুঠোই পাওয়ার মতো ঘটনা।

চোখে আনন্দ অশ্রু আর শত কষ্ট ছাপিয়ে এভাবেই পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরি পাওয়ার বর্ণনা দিচ্ছিলেন, নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের হত দরিদ্র জবদুল প্রামানিকের মেয়ে সাদিয়া সুলতানা।

সিংড়ার প্রত্যান্ত এলাকা পাকুরিয়া গ্রাম। গ্রামের এই মাটির ঘরেই বেড়ে উঠা সাদিয়া সুলতানার। সাদিয়ার বাবার দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর ঘরে সাদিয়ার মা সহ ৫জনের বসবাস।

সাদিয়ার বাবা দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। তেমন একটা খোঁজ রাখেন না তাদের। মা হাজেরা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার আর সাদিয়ার পড়াশুনার খরচ বহন করেন।

বর্তমানে সাদিয়া চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। চার বোনের মধ্যে সাদিয়া সবার ছোট।

সাদিয়া সুলতানার মা হাজেরা বেগম বলেন, প্রথমে যখন পুলিশ নিয়োগের সার্কুলার হয়, তখন আমার বড় মেয়ে জামাই ইসমাইল হোসেন ফোনে সাদিয়াকে আবেদন করতে বলেন।

সাদিয়া তখন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে আবেদন করতে চায় না। তার দুলা ভাইকে বলে টাকা ছাড়া চাকুরি হবে না, শুধু শুধু আবেদন করে কি লাভ। তারপরও দুলাভাইয়ের কথা অনুযায়ী সাদিয়া জামাইয়ের কাছ থেকে দুই’শ টাকা নিয়ে আবেদন করে। পরে লাইনে দাঁড়ালে তার চাকুরিটা হয়। এখন বিশ্বাসই হচ্ছে না টাকা ছাড়াও সরকারী চাকুরি হয়।

Previous articleপ্রস্তাবিত নাটোর- রাজশাহী সরাসরি রেলপথ
Next articleনাটোরে প্রতারনার অভিযোগে নাইজেরিয়ান নাগরিক গ্রেফতার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here