
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের লালপুরে ইজারার বাহিরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু অবৈধ ভাবে উত্তোলনের অভিযোগ করছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। অবৈধ ভাবে বিভিন্ন মৌজায় বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ, ফসলি জমি এবং ঘরবাড়ি পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যের মদনে পদ্মা চরের কুখ্যাত পান্না বাহিনীর প্রধান কাকনের নেতৃত্বে পদ্মা নদীর চর মাহাদিয়ার, চর জাজিরা, নিমতলী সহ আশপাশের এলাকার সাধারণ মানুষের জমি থেকে দেদারচ্ছে বালু কেটে নেয়া হচ্ছে। জমির মালিকরা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের ওপর গুলি চালিয়ে ভীতি তৈরী করা হচ্ছে।

এদিকে, নাটোরের লালপুরের পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার লালপুর-ঈশ্বরদী সড়কের লক্ষীপুর বাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম স্বপন, ঈশ্বরদী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি শুকুর আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন সুমন, আবু সাইদ টুটুল সহ অন্যান্যেরা।
এসময় বক্তারা বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ৫কোটি টাকার বিনিময়ে উপজেলার দিয়ার বাহাদুরপুর এলাকায় বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ইজারাদার সামিউল ইসলাম সেখান থেকে বালু উত্তোলন না করে অবৈধভাবে বিভিন্ন মৌজায় বালু উত্তোলন করছে। এতে করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঈশ্বরদী ইপিজেড, পাকশী হাডিং ব্রিজ, প্রস্তাবিত লালপুর উপজেলার অর্থনৈতিক জোন, নদীর তীর রক্ষা বাঁধ, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মানববন্ধনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন সুমন বলেন, সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে পদ্মা চরের কুখ্যাত পান্না বাহিনীর প্রধান কাকনের নেতৃত্বে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে আতংক সৃষ্টি করতে বালু উত্তোলনকারীরা তাদের উপর গুলি বর্ষণ করে। তাছাড়া স্বশস্ত্র অবস্থায় সব সময় তারা পাহারা দেয়। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন সাময়িকভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিলেও বালু উত্তোলনকারীরা স্থানীয়দের নামে মামলা করে পুনরায় বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার সামিউল ইসলাম বলেন, চাঁদা না দেওয়ার কারনে তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে। ইজারাকৃত জায়গা থেকেই বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা বলেন, এরআগে অভিযোগের ভিত্তিতে ইজারার বাহিরে বালু উত্তোলণ করার কারণে বন্ধ করে দিয়ে এসেছি। আবার বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে আবারো বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইজারার যে সীমানা রয়েছে এর বাহিরো কোন বালু উত্তোলণ করতে দেওয়া হবে না।
