
নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর
পৌষের শুরুতে উত্তরাঞ্চলের পদ্মানদীবিধৌত নাটোরের লালপুর উপজেলায় জেঁকে বসেছে শীত। গত দুই দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারনে কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে বয়ে যাওয়া হিমশীতল বাতাসে জবুথবু হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষেরা।হাড় কাঁপানো শীতে তাই সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শীতের কামড় থেকে বাঁচতে ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত মার্কেটগুলোতে গরম কাপড়ের চাহিদা এখন তুঙ্গে।তবে ভিড় বেশি ফুটপাতের পুরনো শীতবস্ত্রের দোকানেই। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে লালপুর উপজেলার প্রতিটি এলাকার রাস্তার ধারে রেলওয়ে স্টেশন, বাজার ঘাটে ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিম্ন আয়ের মানুষরা ভিড় করছেন ফুটপাতের এসব দোকানে। দু’দিন থেকে তাই ফুটপাতের দোকানগুলোয় গরিব ও নিম্নবিত্ত মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
এই সব ফুটপাতের দোকান থেকে সাধ্য অনুযায়ী শীতবস্ত্র কিনছেন তারা। তবে ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা আরও করুণ। অর্থাভাবে শীতবস্ত্র কিনতে পারছেন না। পরিবার নিয়ে তীব্র শীতে নিদারুণ কষ্টে দিনা-নিপাত করছেন তারা।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান,‘এই মুহুর্তে রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।’ আজ ভোর ৬টার দিকে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই এই মৌসুমেরে রেকর্ডকৃত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে বুধবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
সরেজমিনে লালপুর উপজেলার আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন এলকায় গিয়ে দেখা যায় ফুটপাতের উপরে চটি বিছিয়ে পুরাতন গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসে আছে দোকানী। এই সব দোকানে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০টাকা দরের মধ্যে শীতবস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। পাশে মার্কেট থাকলেও কম দামের কারণে পুরাতন কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের আগ্রহ যেন একটু বেশি। কী নেই এসব ফুটপাতের দোকানে মেয়েদের জ্যাকেট, ফুলহাতা গেঞ্জি, বেøজার, লেদার জ্যাকেট, হাফ সোয়েটার সবকিছু রয়েছে দোকানগুলোতে। আর ক্রেতারা তাদের মনের মতো গরম পুরাতন কাপড় পছন্দ করে কিনছেন। এসময় শীতের গরম কাপড় কিনতে আসা আব্দুল করিম নামের এক জন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন,‘গত দুইদিন ধরে প্রচন্ড শীত পড়ছে, শীত থেকে বাঁচতে সাধ্যের মধ্যে পছন্দ সই গরম কাপড়র কেনার জন্য এখানে এসেছি।’
গরম কাপড় বিক্রেতা হাসিবুল ইসলাম বলেন,‘হঠাৎ শীত জেঁকে বসায় আগের তুলনায় এখন গরম কাপড় বেশি বিক্রয় হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এবছর পর্যাপ্ত গরম কাপড় রাখা আছে। প্রথম অবস্থায় ক্রেতাদের চাহিদা অনুয়ায়ী বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে। তবে আবহাওয়া এরকম থাকলে বিক্রি আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।’
তবে ছিন্নমূল মানুষেরা তীব্র শীত থেকে নিজেদের বাঁচাতে তাকিয়ে আছেন সমাজের বিত্তশালীদের দেওয়া গরম কাপড় ও সরকারি কম্বলের দিকে। কিন্তু বেশিরভাগের কাছেই এখনও পৌঁছেনি প্রতীক্ষার সরকারি কম্বল।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন,‘এবছর লালপুর উপজেলায় সরকারী ভাবে ৫ হাজারের বেশি কম্বল এসেছে। এবং তা বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান দের নিকট হস্থান্তর করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে শীতার্থদের মাঝে সরকারী কম্বল পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি।’
