
মাহবুব হোসেন:
নাটোর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ল্যাব ও মেকানিক্যাল সেড সংস্কার কাজে আরও বড় ধরনের দূর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। ১৫লাখ ৬২হাজার টাকার সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে মাত্র দুই লাখ টাকায়। বাঁকি টাকা ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে পকেট ভরেছেন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইউনুস আলী। এই সেড সংস্কার কাজ করতে গিয়ে সাড়ে ৬’শ টাকার ঢেউটিনের দাম ধরা হয়েছে ৫হাজার টাকা। সরেজমিনে পরিদর্শণ করে এবং অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র জানায়, সওজের অফিস চত্বরে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ল্যাব ও মেকিনিক্যাল সেড সংস্কারের জন্য ১৫লাখ ৬২হাজার টাকার কাজের টেন্ডার আহবান করেন উপ-বিভাগী প্রকৌশলী ইউনুস আলী। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারী ডেইলি অবজারভার প্রত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ পায়। পরে ল্যাব ও মেকানিক্যাল সেড সংস্কারের কাজটি পান মের্সাস গোলাপ কন্সট্রাকশনের ঠিকাদার গোলাপ উদ্দিন আহমেদ।
সূত্র বলছে,উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) ই্উনুস আলী প্রতিটি টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি যোগদানের পর তার পছন্দের কিছু ঠিকাদারকে বেছে নেন। যাদের মাধ্যমে যে কোন কাজ করে নেন। ঠিকাদারকে কিছু লাভ দিয়ে নিজেই সেই কাজ করে টাকা উঠিয়ে নিতেন। এতে করে কিছু ঠিকাদার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া কাজ না করেই লাভের টাকা পাওয়ার কারনে ওই সব ঠিকাদারও চুপ করে সব সহে যান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ল্যাব ও মেকানিক্যাল সেডের শুধুমাত্র পুরাতন ঢেউটিন পরিবর্তন করা হয়েছে। অন্তত ৩’শ ঢেউটিন নতুন লাগানো হয়েছে। পিএইচপি কোম্পানীর যে ঢেউটিন লাগানো হয়েছে তার এক বান্ডিল টিনের বাজার দাম ৪হাজার থেকে ৪হাজার ৫০০টাকা। এতে প্রতিটি টিনের দাম আসে প্রায় সাড়ে ৬’শ টাকা। অথচ সেডে লাগানো প্রতিটি সাড়ে ৬’শ টাকার ঢেউটিনের দাম ধরা হয়েছে ৫হাজার টাকা। এভাবে বাড়তি দাম দেখিয়ে মের্সাস গোলাপ কন্সট্রাকশনের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়েছেন প্রকৌশলী ইউনুস আলী।
সরেজমিনে গিয়ে আমরা মুখোমুখি হই উপ-বিভাগী প্রকৌশলী ইউনুস আলীর। এসময় তিনি সেডের সংস্কার কাজ সরেজিমনে ঘুরে দেখান। তাছাড়া সওজের প্রাচীর রং করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে প্রাচীর রং করা ওই প্রকল্পের মধ্যে ছিল না।
ইউনুস আলী বলেন, শতভাগ কাজ করেছেন তিনি, তবে টিনের বাড়তি দাম কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রকৌশলী ইউনুস আলী বলেন, তার কোন পিছুটান নেই, তিনি কোন অনিয়ম করেননি। তাছাড়া সব কাজের তো আর টেন্ডার দেওয়া যায় না, আন অফিসিয়ালি কিছু করতে হয়।
ঠিকাদার গোলাপ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি কাজ করেই টাকা উত্তোলন করেছেন। কোন অনিয়ম করেননি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে গোলাপ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসডি ইউনুস আলী তাদের মাধ্যমে কোন টাকা উত্তোলন করেননি।
