
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ায়র ডাহিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ভেংড়ী গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় এক যুবককে আটকের পর গ্রাম্য শালিসে ১০০ বেত্রাঘাত ও জুতার মালা পড়িয়ে গ্রামে ঘুরানোর ঘটনা ঘটেছে। এসময় জুতার মালা পড়িয়ে ঘুরানোর পুরো ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
আটক যুবকের নাম মোঃ আমির হামজা। সে পশ্চিম ভেংড়ী গ্রামের হাছান আলীর ছেলে। জনতার হাতে আটকের পর গ্রাম্য শালিসে প্রবাসীর স্ত্রী ও যুবক আমির হামজা কে ১০০ বেত্রাঘাত ও জুতার মালা এবং যুবকের দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন স্থানীয় আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, হান্নান আলী, আফসার আলী সহ গ্রাম্য মাতব্বররা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ভেংড়ী গ্রামের প্রবাসী জামাল উদ্দিনের বাড়িতে তার স্ত্রী ও পশ্চিম ভেংড়ী গ্রামের যুবক আমির হামজা কে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে স্থানীয় জনতা।
পরে বেলা ১১টায় ওই বাড়ির উঠানে গ্রাম্য শালিসে আটককৃত যুবক-যুবতীর ১০০ বেত্রাঘাত ও জুতার মালা এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন গ্রাম্য মাতব্বররা। পড়ে তাদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এনিয়ে গ্রামে সমালোচনার ঝড় উঠে।
গ্রাম্য মাতবর আফসার আলী বলেন, সামাজিক বিধান কান ধরে উঠবস করিয়ে আটক যুবক ও যুবতীকে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। আর হাদিস ও শরিয়তের বিধানে আছে বলে গ্রাম্য মাতব্বররা এই রায় দিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে তিনি এই ঘটনার সাথে পুরোপুরি জড়িত নন।
এবিষয়ে ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রাম্য মাতব্বরদের এই ধরনের বিচার বা জুতার মালা পড়িয়ে গ্রাম ঘুড়ানো দুঃখজনক ঘটনা। তিনি দোষীদের বিচার দাবি করেন।
সিংড়া থানার ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলাম বলেন,মেয়েটিকে উদ্ধার করে সিংড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে নাটোর জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল রানা বলেন, গ্রাম্য সালিসের নামে জুতার মালা পড়িয়ে ঘুরানো এবং বেত্রাঘাত করা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। গ্রাম প্রধানদের এই ধরনের অপরাধ মেনে নেওয়া যায়। স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নিলে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে নির্যাতিদের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রাম প্রধানদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
