
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ায় মসজিদের কমিটির গঠন ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের গুলিবর্ষণে অন্তত ১২জন গুলিবিদ্ধ সহ ১৫জন আহত হয়েছে। আহত ১৩জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ৯জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসীরা জানান, চলনবিলের দুর্গম এলাকা বেড়াবাড়ি গ্রামে মসজিদের কমিটির গঠন ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাইফুল ও আনোয়ার গ্রুপের মধ্যে উত্তোজনা বিরাজ করছিল।
শনিবার সকালে সাইফুলের নেতৃত্বে অতির্কিত ভাবে গ্রামবাসীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে তারা। এতে অন্তত ১২জন গুলিবিদ্ধ সহ মোট ১৫জন আহত হয়।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ১২জন গুলিবিদ্ধকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯জনকে আটক করেছে পুলিশ। বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এলাকাবাসীরা আরও জানায়, ২০১৬ সালে বেড়াবাড়ি গ্রামে রেজাউল নামের একজন হত্যা হয়। হত্যা মামলার আসামিরা বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নিতে ও স্বাক্ষী না দিতে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
অপরদিকে, মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র সম্প্রতি বিষয়টি জোরালো হয়। গতকাল শুক্রবার মসজিদের কমিটি গঠন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
নিহত রেজাউলের স্ত্রী মনিরা বেগম জানান, শনিবার সকালে আমার স্বামী হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামী সাইফুলের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষরা। এতে শামীম প্রামাণিক, মনসুর রহমান, আলী আজগর, আঃ মান্নান, সাইদুর, সবুজ, শুভ, আব্দুর রউফ, দীপন, জামাল, বাবু সরকার, আমিরুল তালুকদার গুলিবিদ্ধ হন, এছাড়া, মোজাম্মেল, লাকী বেগম ও শিরিনা বেগমকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ সাইফুল গ্রুপ। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা।
এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় উভয়পক্ষের ৯জনকে আটক করে পুলিশ। বেলা সাড়ে ১১টায় গুলিবিদ্ধসহ গুরুতর আহত ১৩ জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ মামুন বলেন, বেড়াবাড়ি গ্রামে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন যাবৎ। আমরা বার বার চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারিনি। প্রশাসনের কাছে আবেদন এলাকায় শান্তি ফেরাতে তারা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা উভয়পক্ষের ৯জনকে আটক করে থানায় এনেছি। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
