
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বরাবরের মতো এ বছরও কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির নামে কোমর বেঁধে বাণিজ্যে নেমেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারি থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নেওয়া হচ্ছে দুই হাজার ৬২০ টাকা। এ ছাড়াও নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফরম সংগ্রহে অতিরিক্ত আরও ২০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় দমদমা স্কুলে গিয়ে মিজানুর, মুহিত ও তন্ময় ইসলাম নামের তিনজন শিক্ষার্থীকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে দেখা যায়। তাদের কাছ থেকে ভর্তি ফির সাথে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও কোনো রসিদ দেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থী মিজানুরের অভিভাবক মাহাবুব হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা তো গরিব মানুষ, এত চাপাচাপি করলে বাচ্চা-কাচ্চাদের স্কুলে কেমনে পড়ামু।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, ভর্তি ও সেশন ফির নামে বাণিজ্যে নেমেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর এখানে অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিুবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী। একটি পরিবারের সব উপার্জন তার সন্তানের পেছনে ব্যয় করতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু ‘অতিরিক্ত কোনো ফি নেওয়া হচ্ছে না’ দাবি করে বলেন, এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি, পৌরকর, জমির খাজনা, উন্নয়ন, স্যানিটেশনসহ ২৩টি খাতে এই অর্থ নেওয়া হচ্ছে। আর শাখা নির্ধারণ না হওয়ায় আপাতত শিক্ষার্থীদের রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। তবে দ্রুতই তাদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের রসিদ দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম সামিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। যাতে দ্রুত ওই প্রতিষ্ঠানে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার হয়। নাটোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আখতার হোসেন বলেন, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
