
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নাটোরের হালতিবিল, যেটি মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত। এই অঞ্চলের মানুষদের বিনোদনের আকর্ষনীয় কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠেছে হালতিবিল। তবে বিনোদনের নামে অশ্লীল নৃত্যু আর প্রেমিক যুগলদের আচরনে নস্ট হচ্ছে পরিবেশ।
উত্তাল জলরাশিতে পিকনিকের নামে চলছে অশ্লীলতা। নৌকায় উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে চলছে পিকনিক, সাথে নর্তকী দিয়ে চলছে অশ্লীল নৃত্য। তবে এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে।
হালতিবিলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিনোদন পিয়াসী মানুষ নৌকা ভ্রমনে আসছেন। কিন্তু বিনোদনের নামে ভাড়া করা ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলোতে চলছে চরম অশ্লীলতা। নৌকায় প্রেম- কখনও খোলা কখনও ছাউনি দেয়া। কখনো দু’পাশ কাপড় দিয়ে মোড়ানো। ভেতরে চটের বিছানাও থাকে, নির্জনে সময় কাটানোর জন্য এই আবরণ। এর ভেতরে চলে অশ্লীলতা।
প্রিয় মানুষের সঙ্গ পাওয়ার জন্য উঠতি বয়সী অনেকেই বেছে নেয় এ নৌকা। এ সুযোগে নৌকার মাঝিরাও মেতে ওঠে অনৈতিক ব্যবসায়। সেখানে মাঝিরা ফাঁদ পেতে বসেছে অন্যরকম ব্যবসা। নৌকা ভাড়া নেয়া হয় ঘণ্টা হিসাব করে। ভাড়ার পরিমাণ প্রতি ঘণ্টায় চুক্তি হিসেবে। ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভাড়া দিচ্ছে মাঝিরা। ভাড়ার পাশাপাশি সঙ্গে বকশিশ। প্রেমিক যুগল যখন কাপড় ঘেরা-খোলা নৌকায় মত্ত তখন মাঝিরা কাজ করে নিরাপত্তা কর্মী-পাহারাদার হিসেবে। নৌকাগুলোতে সকাল থেকেই শুরু হয় জমজমাট প্রেমের আড্ডা, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
বহু দিন ধরেই এ ব্যবসা চলছে। সহজ-সরল লোক পেলেই অনেকেই হয় ফিটিংয়ের শিকার। মাঝিরা যাত্রীর জন্য ঘাট ছেড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে জোড়া কোন ছেলে-মেয়ে দেখলেই তাদের পিছনে ছুটে। বলে, “আসেন মামা আমার নৌকায় আসেন”।
হালতিবিলের মাঝে বিভিন্ন স্থানে নৌকা থামিয়ে চলছে এসব অশ্লীল কাজ। এবং পিকনিক ও নৌকা ভ্রমণের নামে লাউডস্পিকারে মাত্রাতিরিক্ত জোরে গান বাজিয়ে শব্দদূষণের মাধ্যমে গণ উপদ্রব সৃষ্টি করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন,করোনাকালেও যেন থেমে নেই কুকর্ম। এসব অপকর্ম বন্ধে আমাদের চেষ্টা রয়েছে,কিন্তু-নৌকার মাঝিরা খুবই চালাক। এসব অচিরের বন্ধ করা প্রয়োজন।
৪নং পিপরুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলুর রহমান মিশন বলেন,এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন বেড়াতে আসে। কিন্তু,কিছু কিছু যুবক-যুবতীরা আপত্তিকর অবস্থায় অবাধ চলাফেরা করছে, প্রশাসনের নিষেধ থাকার পরও, দু’একজন সুবিধাবাদী নেতার যোগসাজসে নৌকার মাঝিরা বেশি টাকার লোভে এমন কাজে সহায়তা করেছেন। এসব কাজের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কেউ এমন কাজের সাথে জড়িত নেই, উল্টো এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
স্থানীয়দের মেম্বার মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন,আগে এসব অশ্লীলতা হচ্ছিল,কিন্তু-এখন আর হয়। এসব বিষয় আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। যদি-আবারও এসব অপকর্ম শুরু হয়,তাহলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ আকবর আলী জানান,হালতিবিলে আমরা পরিচ্ছন্ন পরিবেশ চাই। তার জন্য আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে ও চলবে।
নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন,বিলের পরিবেশ ভালনা। আমরা বিলের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ চাই, এবিষয়ে তিনি প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে,আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
