নাটোরের সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণকারী মাইক্রোবাস উদ্ধার সহ ১জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মাইক্রোবাসের ভিতর তল্লাশী করে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. লুৎফুল হাবীব রুবেলের অসংখ্য লিফলেট, স্টিকার লিফলেট, ক্যালেন্ডার সম্বলিত পোস্টার ছবি জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামী সিংড়া উপজেলার চকপুর গ্রামের মৃত রবিউল্লাহ প্রামাণিকের ছেলে মো. আতাউর রহমান (৪৫)।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়। এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানান, ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবু সাদাদ। তবে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি উপস্থিত কোনো পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ভুক্তভোগী মো.দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ ও মারধরের মামলায় সিংড়া থানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত আতাউর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গ্রেপ্তারকৃত আসামীর তথ্য ও দেখানো মতে, অপহরণ কাজে ব্যবহৃত কালো রংয়ের বর্ণিত একটি হাইস মাইক্রোবাস(রেজিঃ নং- ঢাকা মেট্রো-চ ৫৬-৫৩৯৫) গাড়ীটি আসামীর বসত বাড়ীর গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর মাইক্রোবাসের ভিতর তল্লাশী করে ২ টি চায়না চাপাতি, ১টি চায়না টিপ চাকু, ১টি বার্মিজ কাটার, ২ টি দেশীয় রামদা, ২টি স্টিলের পাইপ,২ টি স্ট্যাম্প (লাঠি)। ১টি দেশীয় তৈরী চাপাতি, পলাতক আসামী সুজন ড্রাইভার এর ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ীর কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
তল্লাশিকালে গাড়িটির ভেতর থেকে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেলের অসংখ্য লিফলেট, স্টিকার লিফলেট, ক্যালেন্ডার সম্বলিত পোস্টার উদ্ধার করা হয় বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা(ডিএসবি) পরিদর্শক(ইন্সপেক্টর) কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ, ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবু সাদাদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জামাল উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনলাইনে আবেদনের পর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে যান।
সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে আবারও বেধড়ক মারধর করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে পরিবারের লোকজন নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এ ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবার প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীব ও তার সমর্থকদের দায়ী করে আসছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সুমন নামের এক আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন যে প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ নিয়েই সুমনসহ অন্য আসামিরা দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধর করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় লুৎফুল হাবীবকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলীয় ভাবেও লুৎফুল হাবীব রুবেলকে শোকজ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।