তবে কি দুর্ভিক্ষ এসেই গেল!

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফর শেষে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার বিভিন্ন বক্তব্যে আগামী ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনার কথা বলেই আসছেন। যদি এটা সত্য হয় তবে কি কিছুই করার নেই আমাদের? কিভাবে আমরা বাংলাদেশ ও দেশের জনগণ এই অশনি পরিস্থিতি সামাল দিব?

২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হল এক বৈশ্বিক মহামারী করোনা। যার জন্য ৬.৫৮ মিলিয়ন বা প্রায় সাড়ে ৬০ লক্ষ মানুষ সারা বিশ্বে প্রাণ হারায়। আমাদের বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ২৯ হাজার মানুষ এই মহামারীতে প্রাণ হারায়।এখনো এই মহামারী বিদ্যমান থাকাবস্থায় আরেক মনুষ্য সৃষ্ট সংকট দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে।

বলা যায় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধই এই পরিস্থিতির খলনায়ক।
বর্তমানে অনেক উন্নত দেশও সংকটে পড়েছে। ইংল্যান্ডের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই খারাপ। তাদের বিগত ৪০ বছরের ইতিহাসে নিত্য পণ্যের দাম সর্বোচ্চ বেড়েছে। ধস নেমেছে তাদের অর্থনীতির।

যদি দুর্ভিক্ষের বিষয়টা সত্যি হয় তবে কি হবে আমাদের বাংলাদেশ এবং এ দেশের জনগণের? আমরা কি পেরেছি ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের বা পঞ্চাশের মন্বন্তরের থেকে শিক্ষা নিতে? সেই সময়ে দুর্ভিক্ষে বাংলা জুড়ে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ না খেয়ে মারা যায়। ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষ শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য হয় নাই।

অন্যান্য কারণ গুলোর মধ্যে তার প্রধান অন্যতম কারণ ছিল খাদ্য উৎপাদন হ্রাস, খাদ্যের মনুষ্য সৃষ্ট সংকট মজুদদারি, খাদ্য সরবরাহ হ্রাস, খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি।
হায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা এগুলোর শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। খাদ্যশস্য মজুদদারী, খাদ্যশস্যের মূল্য বৃদ্ধি, গুদামজাত করন ইত্যাদি।

পরিত্রাণের উপায়:
এই বৈশ্বিক খাদ্য সংকট পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের দেশের সরকার ও নাগরিকদের অতি সতর্ক ও সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। জনগণ এক ইঞ্চি চাষযোগ্য ভূমিও চাষ বিহীন এবং আবাদ যোগ্য ভূমিকে অনাবাদি রাখবে না। সরকার সকল ধরনের সার, বীজ, কীটনাশক ভর্তুকি বাড়িয়ে দিয়ে চাষীদের কে তথা কৃষকদেরকে চাষাবাদে উৎসাহিত করতে হবে। এতদ্ব বিষয়ে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকগণ বিশেষ করে ব্যবসায়ীগণ সরকারকে সহযোগিতা করবেন।

কোন ধরনের গুদামজাত, খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি, মুনাফা খোরী হওয়া যাবে না।
আমাদেরকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে যে, বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে অন্তত আমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ নিরসনে আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
এতে করে অন্তত আমরা খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবো। এই দেশ ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশ।
এই দেশ, এই মাটি,
সোনার দেশ,
সোনার চেয়ে খাঁটি।

Check Also

দেশের কৃষি ক্ষেত্রের অগ্রযাত্রায় ন্যাশনাল ব্যাংকের অবদান

দেশের প্রথম প্রজন্মের বেসরকারী ব্যাংক হিসাবে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড তার সুদীর্ঘ চার দশকের পথচলায় দেশের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *