নাটোরের শষ্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা উৎসব। এরই মধ্যে কর্তন হয়েছে অন্তত ৪০শতাংশ ধান। বাঁকি ৬০শতাংশ ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে অনুকূল আবহাওয়ায় ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষক। তবে, গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহ কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ধানকাটা শ্রমিকদের। সবকিছু ঠিক থাকলে শুধুমাত্র চলনবিল থেকে এবার কৃষকের ঘরে উঠবে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার ধান।
ভাওয়াইয়া গানের তালে তালে নাটোরের বিস্তির্ণ চলন বিলের মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষিশ্রমিকরা। বোর ধান কাটার এই উৎসব দেখে বোঝার উপায় নেই মাথার ওপর আগুন ঝরাচ্ছে গ্রীষ্মের সূর্য।
৬ মাস পানির নিচে থাকা দেশের বৃহত্তম এই বিল থেকে আসে এ অঞ্চলের মানুষের বছরের খোরাকসহ যাপিত জীবনের অনেক কিছু। তাই যেনো এই সেনালী ধানের শীষে মিশে আছে কৃষকসহ লাখো মানুষের স্বপ্ন। অনুকূল আবহাওয়ায় ফলন হয়েছে ভালো। তবে দাম নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে কৃষকের মনে।
একজন কৃষক বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া ভালো হিসেবে ধান ভালো দেখা যাচ্ছে। বিঘাপ্রতি ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হইছে আমাদের। ধানের দাম একটু বাড়ালে কৃষক লাভবান হবে।’
চলনবিলের এই সোনালী ধানে শুধু গৃহস্তের গোলা ভরে না, ১৫ থেকে ২০ দিনে অন্তত ৬ মাসের আহারের ব্যবস্থা হয়, এই যজ্ঞের সঙ্গে জড়িত থাকা দেশের নানা প্রান্তের হাজারো শ্রমিক পরিবারের।
এবছর জেলায় ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যার ৩৬ হাজার হেক্টরই চলনবিলে। যেখান থেকে অন্তত ২ লাখ টন ধান উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের। যার আনুমানিক বাজার মূল্য অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকা।
নাটোরের সিংড়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ বলেন, ‘৭২টি হার্ভেস্টর বিতরণ করা হয়েছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না না থাকে আশা করি এ বছর কৃষকরা নির্বিঘ্নে ধান ঘরে ওঠাতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, সামনে আবহাওয়া পূ্র্বাভাস অনুযায়ী আমরা কৃষকদের মাঝে সচেতন করছি যে, ৮০শতাংশ ধান পাকলেই তা কেটে ফেলার জন্য।
প্রতিবছর শ্রমিক সংকট থাকলেও এবছর সে সংকট নেই চলনবিলে। তাই তো কৃষক অনায়াশে ধান তুলছেন ঘরে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন হয়েছে ভাল। তবে কৃষকরা বলছেন, সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা মন ধান বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবেন চলনবিলের কৃষকরা।