দক্ষিণের ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উত্তরের জেলা নাটোরের। বিশেষ করে ভেঙে পড়েছে ভুট্টা ও কলা গাছ। এছাড়া মৌসুমি ফল আম সহ বিভিন্ন সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষতির শিকার কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, একদিনের ঝড়ে কৃষিতে অন্তত ৫১ কোটি টাকার ফসল ক্ষতির শিকার হয়েছে।
দক্ষিণের ঘূর্ণিঝড় রিমাল শেষ হওয়ার পর নাটোরের কৃষিতে ক্ষতির চিহ্ন যেন ফুটে উঠেছে। উঠতি ভুট্টা, কলা গাছ ভেঙে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন সবজি খেতের পাশাপাশি অন্তত ৮ধরনের ফসল ক্ষতির শিকার হয়েছে।
নাটোর শহরতলীর মোহনপুর এলাকার কৃষক ওসমান গনি জানান, তার এক বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছিলেন। কিন্তু ঝড়ে পুরো জমির ভুট্টা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। এতে করে ফলন কম হওয়ার মানে কি আশঙ্কা।
আরেক ভুট্টা চাষী ইয়াছিন আলী জানান, কিছুদিন আগে জমিতে লাগিয়েছিলেন ভুট্টার গাছ। কিন্তু সেই কাঁচা ভুট্টার গাছ এখন তার মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। এতে তার জমির পুরো ভুট্টা ক্ষেত নস্ট হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে নাটোরের আম বাগানীরা। বাগানের প্রতিটি গাছ থেকে ফজলি, খিরসাপাত, আম্রপালি, গোপালভোগ সহ বিভিন্ন জাতের আম গাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ঝড়ে পড়েছে। আর ঝরে পড়া আমে ছয়লাব হয়ছে নাটোরের বাজার। শহরের নিচাবাজার, স্টেশন বাজার ও মাদ্রাসা বাজারে ঝরে পড়া আম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫টাকা কেজি দরে। পরিপক্ক ও অপরিপক্ক আম ঝড়ে পড়ার কারণে এবার সেলক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাটোর মোহনপুর এলাকার আম বাগান মালিক পলাশ খান বলেন, ঝড়ে তার বাগানের ৬০মন কাঁচা আম পড়ে গেছে। এতে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাধ্য হয়ে ২০টাকা কেজি দরে কাঁচা আম বিক্রি করেছেন।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে জেলার মাঠগুলোতে ১লাখ ১৬হাজার৫৭১ হেক্টর জমিতে ভুট্টা, কলা, বিভিন্ন সবজি রয়েছে। এরমধ্যে ঝড়ে ৩হাজার ৮২৪হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। যার অনুমানিক ক্ষতি অন্তত ৫১কোটি টাকা। তবে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত উপ-পরিচালক লুৎফুন নাহার।
তবে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের বিশেষ প্রনোদনার আওতায় এনে সাবলম্বী করার পাশাপাশি স্বপ্ল সুদে ঋণ দেওয়ার দাবী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।